×
  • প্রকাশিত : ২০২০-১২-১০
  • ১৫২৪ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বপ্ন সত্যি হলো। দৃশ্যমান হলো স্বপ্নের পদ্মা সেতু। যুক্ত হলো প্রমত্তা পদ্মার দুই পাড়। আজ বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ৪১তম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে বাস্তব রূপ পেলো পুরো পদ্মা সেতু। বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা ২ মিনিটে সেতুর সর্বশেষ এই স্প্যানটি বসে। ২-এফ আইডির এই স্প্যান বসানোর পরই যুক্ত হলো মুন্সীগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলা। পদ্মা সেতুর পিয়ার-১২ ও পিয়ার-১৩ নম্বরে শেষ স্প্যানটি বসানো হয়।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম এবং পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের বাংলা ট্রিবিউনকে এ খবর নিশ্চিত করেন।
দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, সর্বশেষ স্প্যানটি বসানোর পর সেতুর পুরো ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান হলো। আর এরই মাধ্যমে যুক্ত হলো মুন্সীগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলা।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। এরপর একে একে নানা বাধা পেরিয়ে ও নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তিন বছর দুই মাস ১০ দিনে সেতুর সব স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়।
এখনও সেতুর আরও কিছু কাজ বাকি আছে। যেমন−রোডওয়ে স্ল্যাব, রেলওয়ে স্ল্যাব, সুপার-টি গার্ডার বসানো। স্ল্যাবের ওপর পিচ ঢালাইয়ের কাজ, আলোকসজ্জা, ল্যাম্পপোস্ট বসানোর কাজ করতে হবে। সব মিলিয়ে যান চলাচলের জন্য সেতু উন্মুক্ত করতে আরও এক বছর লাগতে পারে। তবে স্প্যান বসানো শেষে পদ্মা সেতুর বাকি কাজ শেষ হতে আর ১০ মাস সময় লাগবে বলে সম্প্রতি জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এর আগে বুধবার (৯ ডিসেম্বর) বিকাল সোয়া ৫টার দিকে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে মাওয়ার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডের স্টিল ট্রাস জেটি থেকে বহন করে কাঙ্ক্ষিত পিয়ারের উদ্দেশে রওনা দেয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন তিয়ান-ই। সন্ধ্যা ৬টার দিকে পিয়ারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় স্প্যানটিকে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে জেটি থেকে স্প্যান রওনা দিতে ঘণ্টা তিনেক অপেক্ষায় থাকতে হয় ক্রেন তিয়ান-ই কে।
পদ্মা সেতু সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সব স্প্যান বসাতে তিন বছর দুই মাসের বেশি সময় লাগলেও ২০২০ সালেই ২১টি স্প্যান বসানো হয়। যদিও বন্যার কারণে এ বছরের দীর্ঘ চার মাস স্প্যান বসানোর কাজ করতে পারেনি ঠিকাদার কোম্পানি। এছাড়া করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণেও সেতুর কাজে কিছু ধীরগতি আসে। পরে তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়।
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। আর ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বসানো হয়েছিল প্রথম স্প্যানটি। সেতুর মোট পিলার ৪২টি এবং এতে স্প্যান বসানো হয় ৪১টি।

ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতু। সেতুর ওপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। প্রকল্পের সর্বমোট বাজেট ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।
মূল সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ২৮৫টি এবং দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে এক হাজার ৯৩০টি স্থাপন করা হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার-টি গার্ডারের মধ্যে ৩১০টি স্থাপন করা হয়েছে।


নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat