×
  • প্রকাশিত : ২০২০-১২-০৮
  • ৭৪৮ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক
আজ ৮ ডিসেম্বর, চাঁদপুর মুক্ত দিবস।

১৯৭১ সালের এই দিনে চাঁদপুর পাক হানাদার বাহিনীর বলয় থেকে মুক্ত হয়েছিল। ভারতের মাউন্টেন ব্রিগেড ও ইস্টার্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণে ৩৬ ঘণ্টা তীব্র লড়াইয়ের পর ৮ ডিসেম্বর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা এবং বিনা প্রতিরোধেই চাঁদপুর মুক্ত হয়। চাঁদপুর থানার সম্মুখে বিএলএফ বাহিনীর প্রধান মরহুম রবিউল আউয়াল কিরণ প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।আজ চাঁদপুর মুক্ত দিবস

জানা যায়, ১৯৭১ সালের ৭ এপ্রিল চাঁদপুরে দখলদার বাহিনী দুটি বিমান থেকে সেলিংয়ের মাধ্যমে প্রথম আক্রমণ শুরু করে। প্রথম দিনের হামলায় চাঁদপুর শহরের পুরান বাজারের একজন নারী পথচারী নিহত হন। পরদিন ৮ এপ্রিল বিকেলে প্রায় ৫শ’ পাকসেনা বোঝাই একটি বহর চাঁদপুর আসে। এবং শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে চাঁদপুর কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করে। এই স্কুলের মাঠে এক বৃদ্ধাকে গুলি করে হত্যা করে তারা।

ওই দিন রাতেই মুক্তিযোদ্ধা ও হানাদার বাহিনীর সাথে গোলাগুলি হয়। এসময় বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা মারাত্মক আহত হন। ৯ এপ্রিল ভোরে পাকবাহিনী শহরের প্রবেশ করে চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ইসমাইল হোসেন ভলন্টিয়ার (৫৫) নামে অপর এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া, হাজীগঞ্জের অলীপুর গুদারাঘাট, বালাখাল খেয়া ঘাট, ফরিদগঞ্জের বাসারা ও গাজীপুরসহ মোট ২৬টি সম্মুখযুদ্ধ হয়েছিল। এর মাঝে চলে খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ। তারপর দীর্ঘ সময় যুদ্ধের পর মেলে মুক্তি।
তৎকালীন চাঁদপুর মহকুমা জেলায় সর্বশেষ যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল ৭ ডিসেম্বর লাকসাম ও মুদাফ্ফরগঞ্জ মুক্ত হবার পর। যৌথ বাহিনী হাজীগঞ্জ দিয়ে ৬ ডিসেম্বর চাঁদপুর আসতে থাকলে মুক্তিসেনা কর্তৃক হানাদার বাহিনী প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। ৩৬ ঘণ্টা সম্মুখ যুদ্ধের পর পালিয়ে যায় পাকবাহিনী। মুক্ত হয় চাঁদপুর।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে বিএলএফ কামান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হানিফ পাটোয়ারী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শুনে আমরা যুদ্ধে গিয়েছি। চাঁদপুর কলেজে ট্রেনিং ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছি। ৪ তারিখ মিলিটারি যখন চাঁদপুর আসলো, আমরা তখন এখান থেকে চলে যাই। প্রথমত কয়দিন ফরিদগঞ্জে অবস্থান করেছিলাম, পরে ওখান থেকে ভারতে গিয়েছিলাম। ভারতে আমাকে স্পেশাল ট্রেনিংয়ের জন্য দেলাদুনে পাঠানো হয়েছিল। ট্রেনিং শেষ করে আসার পর বিএলএফ চিপ কমান্ডার মনির ভাই জানান, আমি চাঁদপুরের হলেও আমাকে ফরিদগঞ্জের দায়িত্ব দিতে চান। ওই সময় আমাদের উপর নির্দেশ দেয়া হয় যাতে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বৃদ্ধি করি। ফরিদগঞ্জের কড়াইতলী হাইস্কুলে আমরা একটা ট্রেনিং ক্যাম্প চালু করি। সেখানে ১০০ ছেলেকে ট্রেনিং দিয়ে মুক্তিবাহিনী বড় করি। যুদ্ধ চলাকালীন আমাদেরকে এলাকার মানুষজন খাবার দিয়ে সাহায্য করে। এছাড়াও আরও অনেক স্মৃতি আছে। এরপর মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ি। এবং দেশ স্বাধীন হয়।’

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat