চাঁদের মাটি-পাথর নিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এল চিনা মহাকাশযান চাঙ ই-৫ (chang'e 5)। মঙ্গোলিয়ার ভিতরে সিজিওয়াং ব্যানারে স্থানীয় সময় বেলা একটায় ওই মহাকাশযানের ক্যাপসুলটি বুধবার অবতরণ করে। নভেম্বর মাসের ২৪ তারিখ চাঙ ই-৫ মহাকাশে উৎক্ষেপন করা হয়েছিল। কক্ষে ভাগ হয়ে যাওয়া একাধিক অংশের এই মহাকাশযানের একটি অংশ চাঁদের পিঠে নামে।
চীনের উপকথায় থাকা চাঁদের দেবীর নামে এর নামকরণ করা হয়েছে। চীনের হেইনান প্রদেশের ওয়েনচেং স্পেস সেন্টার থেকে ভোর সাড়ে চারটায় আট টনের ওই মহাকাশযান যাত্রা শুরু করে। ২০১৭ সালেই মূল মিশনটি পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে লংমার্চ-৫ রকেটের ইঞ্জিনে সমস্যার কারণে অপেক্ষা বাড়তে থাকে। এই মহাকাশযানে চাঁদের কক্ষপথে যাওয়ার জন্য নকশা করা একটি অর্বিটার, একটি চন্দ্রযান ও চন্দ্রযানকে চাঁদের পিঠে নামানোর ও ফিরিয়ে আনার সক্ষমতা সম্পন্ন আরও দুটি যান ছিল। ১ ডিসেম্বর চীনের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে চন্দ্রযানটি চাঁদের নিকট প্রান্তের ‘ঝড়ের মহাসাগর’ বলে পরিচিত এলাকার উত্তরে অবতরণ করেছিল। চীনের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ভোররাতে চন্দ্রযানটি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় অন্তঃমঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সিজিওয়াং ব্যানারে অবতরণ করে বলে চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) এর বরাতে জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া।
১৯৭০ এর দশকের পর এই প্রথম কোনো চন্দ্রযান চাঁদের নমুনা নিয়ে পৃথিবীতে ফিরল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এর মাধ্যমে চীন বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৬০ ও ১৯৭০ সালে তা করতে সমর্থ হয়। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুংইয়াং জানিয়েছেন, এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এর ফলে বিশ্ব উপকৃত হবে। বাড়বে মহাকাশ গবেষণায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। চায়না এয়ারোস্পেস সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি কর্পোরেশনের আওতাধীন চায়না একাডেমি অব স্পেস টেকনোলজির চ্যাং’ই মিশনের উপপ্রধান নকশাবিদ পাং জিং জানিয়েছিলেন, চ্যাং’ই ৪৪ বছরের মধ্যে পৃথিবী থেকে চাঁদের নমুনা সংগ্রহে যাওয়া প্রথম মিশন।