বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টিমের সাম্প্রতিক
ভারত সফর নিঃসন্দেহে দুই দেশের দৃশ্যমান সম্পর্ককে আরো সুউচ্চ স্থানে নিয়ে যাবার ক্ষেত্রে এক অনন্য ভূমিকা রাখবে। যেকোন দু’দেশের মৈত্রী স্থাপনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশগুলোর পারস্পরিক সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। ভারত-বাংলাদেশ এর মধ্যকার সাংস্কৃতিক মিলনটা বহু পুরোনো এবং জন্মাবধি তারা নাড়ির টানে যুক্ত। প্রবাহমান ভাষা ও সংস্কৃতির নাড়ির টানকে ব্যবহার করেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো গভীরে প্রোথিত হতে পারে। স্বল্প কথায় যদি বলতে হয় তবে বলবো, তরুণ
ডেলিগেটদের এই সৌহার্দ্য সফর এক পারস্পরিক মৈত্রী মঞ্চ হয়ে পরবর্তী সময়ের জন্য
নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। নিঃসন্দেহে বলা যায়, এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক
বাধাগুলো কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করবে। এবারের
ইয়ুথ ডেলিগেশন টিমের ভারত সফর
ব্যক্তিগতভাবে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে
'বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন-২০১৯' এর কথা। ভারত সরকারের
আমন্ত্রণে ২০১৯ সালের ইয়ুথ ডেলিগেশন টিমের একজন গর্বিত সদস্য হিসেবে আমি গিয়েছিলাম
ভারত সফরে।
বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টিম ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল
ভারতের মাটিতে পা রাখে। উষ্ণ অভ্যর্থনা আর ফুলেল শুভেচ্ছাতে নয়াদিল্লি যুবাদের বরণ করে নেয়। ২৯ এপ্রিল পৃথিবীর
সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পার্লামেন্ট হাউজে গিয়ে যেনো এক নতুন সৌহার্দ্যের মাত্রা
আবিস্কার করে যুবারা। আমরা ফিরে গিয়েছিলাম আমাদের জন্মলগ্নে, আমরা স্মৃতি হাতড়ে বেড়িয়েছি আমাদের ইতিহাসের। বাংলাদেশ
সৃষ্টির ইতিহাসের অংশ এই পার্লামেন্ট। একটু বিস্তারিতই বলছি, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু
হওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে ভারতের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে ইন্দিরা গান্ধী
দ্বিতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ৷ শপথ গ্রহণের আগেই এই উপমহাদেশের ভয়াবহ
গণহত্যা প্রত্যক্ষ করতে হয় ইন্দিরা গান্ধীকে।
রক্তের হোলিখেলার মাঝে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা
করতে হয়নি কোন পক্ষে যাবেন তিনি। একটি উদার ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের সরকার প্রধান
হিসেবে ইন্দিরা গান্ধী দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেন এবং নির্যাতিত জনগোষ্ঠীর পাশে
দাঁড়ান। মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করে গোটা বিশ্বে আমাদের গণহত্যার চিত্র তুলে ধরেন
তিনি। এদিকে একাত্তরের ২৫
মার্চ রাতে বাংলাদেশের জনগণের ওপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা মৃত্যু
ও আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করে। সাথে সাথেই ভারতের প্রথম প্রতিক্রিয়া পাওয়া
যায়। ২৬
মার্চ এই পার্লামেন্টে দাঁড়িয়েই পররাষ্ট্রমন্ত্রী শরণ সিং তাঁর সরকারের উদ্বেগের কথা
জানান। পরদিন
ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্ক হয়। রাজ্যসভায়
এক বক্তৃতায় ইন্দিরা গান্ধী সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা বলেন। ২৭
মার্চ ১৯৭১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের
পক্ষে পূর্ণ সমর্থন দেন। শরণার্থীদের আশ্রয়ের জন্য সীমান্ত খুলে দেওয়া হয়। পশ্চিমবাংলা, বিহার, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা সীমান্তে শরণার্থী শিবির খোলা হয়। ভারত
দক্ষ হাতে শরণার্থী সমস্যারও একটা ব্যবস্থাপনা করেছিল।
বাংলাদেশের কেউ ভারতে পৌঁছালে খাদ্য, আশ্রয় ও নিরাপত্তা মিলত। জুন
মাস নাগাদ প্রতিদিন এক লাখ করে মানুষ ভারতে শরণার্থী হতে থাকে। ভারতের
অর্থনীতিতে এর প্রচণ্ড চাপ পড়ে। অর্থনীতির দুর্বলতা সত্ত্বেও ভারতের আচরণ ছিল
হূদ্যতাপূর্ণ। সেই কঠিন মুহুর্তে ভারতের সংসদেই আলোচনা হতো আমাদের নিয়ে, আমাদের খাদ্য, আশ্রয় দেবার জন্য
এই সংসদ তখন হয়ে উঠে ত্রাণকর্তা। আমাদের আরো বেশি আবেগতাড়িত করেন ইলেকট্রনিকস
এন্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সুরেন্দ্রজিত সিং আলুওয়ালিয়া। পশ্চিমবঙ্গের
দার্জিলিং আসনের লোকসভা সদস্য আহলুওয়ালিয়া বাংলায় কথা বলে আমাদের চমকে দেন। প্রবীণ
এই পার্লামেন্টারিয়ান মুক্তিযুদ্ধকালের স্মৃতিচারণে আপ্লুত হয়ে পড়েন। কোটি
শরণার্থীকে আশ্রয় দিতে যে ভারতীয়রা এগিয়ে এসেছেন নিজ থেকেই এবং সেই মানুষদের কাতারে
যে তিনিও ছিলেন তা বলতেই গলা ধরে আসে আহলুওয়ালিয়ার।
বুকের ভেতর থেকে হাহাকারের মাত্রা যখন চোখের
জলে গড়িয়েছে তখন পুরো হলরুমে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে।
ইন্ডিয়া গেট এর কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি। ভারতের
জাতীয় স্মৃতিসৌধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তৃতীয় ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে নিহত ৯০,০০০ ভারতীয় সেনা জওয়ানদের স্মৃতিরক্ষার্থে
এই স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়। মহাকাব্যিক মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জন্য প্রাণ
উৎসর্গ করা মহান ভারতীয় সৈনিকদের মনুমেন্টও রয়েছে সেখানে।
এই জায়গাটি আমাদের ইতিহাসকেও ধারণ করে। আমরা
অনেকেই হয়তো জানিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য নিহত ভারতীয় সৈন্যের সংখ্যা
কতো! মুক্তিযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর
ঠিক কত সৈন্য নিহত হয়েছিলেন, বাঙালি তা আজো জানে না। অথচ
প্রায় তিন হাজার ভারতীয় সেনা জীবন উৎসর্গ করেছেন আমাদের মাতৃভূমির জন্য । সেখানে
দাঁড়িয়ে বার বার একটি প্রশ্ন তাড়া করে বেড়াচ্ছিলো যে, আমার দেশের জন্য ভিনদেশী যারা অকাতরে জীবন দিয়ে গেলেন
তাঁদের প্রতি আমাদের কি কোনো দায় নেই? আমরা আজ পর্যন্ত দেশের
মানুষকেও জানাতে পারিনি এই ভারতীয় সৈনিকদের অকাতরে জীবন দেয়ার ইতিহাস। অজান্তেই
চোখে জল এসেছে তাঁদের জন্য, বাংলাদেশের
পক্ষ থেকে এই চোখের জলের মাধ্যমেই তাঁদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার কথা জানিয়ে এসেছি।
ভারতীয় সেনারা সর্বোপরি ভারত সরকার বাংলাদেশের
শরণার্থীদের শুধু আশ্রয় ও লালন পালনের দায়িত্ব পালন করেই যে চুপ ছিল তা কিন্তু নয়। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরার সরকারদের স্ব স্ব স্থানে রিফিউজি ক্যাম্প এবং গেরিলা
ট্রেনিং ক্যাম্প স্থাপন করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দশ দেয়। নির্বাসিত
বাংলাদেশি সেনা অফিসার ও স্বেচ্ছাসেবীরা ওইসব ক্যাম্প থেকে মুক্তিবাহিনীর সদস্য সংগ্রহ
ও প্রশিক্ষণ কাজে নিয়োজিত হয়। রিফিউজির পাশাপাশি মুক্তিবাহিনী গেরিলাদের রিক্রুট
করে নিয়ে এসে ট্রেনিং দেওয়া হয় । সবাই পায় গেরিলা প্রশিক্ষণ, ঘুরে দাঁড়ায় বাঙ্গালি, মুক্তিযোদ্ধা
হিসেবে প্রশিক্ষণ পেয়ে তারা সশস্ত্র অবস্থায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতো এবং একের পর এক
অপারেশন চালাতো।
ভারত সরকার বিএসএফকে আনঅফিশিয়ালি নির্দেশ দেয়, বাংলাদেশী গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিসংগ্রামে যতটুকু
সম্ভব সাহায্য করতে এবং তাদেরকে এ ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়, সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কমান্ডো রেইড/ডেমোলিশনে
দক্ষ ১০০ জন ব্যক্তি এবং কতিপয় অফিসার নিয়ে বিএসএফ কমান্ডো বাহিনী গঠন করে,
যারা পূর্ব পাকিস্তানের ভেতরে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথেই পাকিস্তান বাহিনীর
ওপর অতর্কিতে হামলা চালাতো এবং পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর কার্যক্রমকে শ্লথ ও নস্যাত
করে দিতো। ভারতের ইস্টার্ন কমান্ডের মেজর জেনারেল জেএফআর জ্যাকব এক ইন্টারভিউতে
বলেছেন, বেসরকারিভাবে ভারত এপ্রিল মাস
থেকে বাংলাদেশে জড়িয়ে যায়, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে সেটা ঘটে অনেক
পরে। তিনি জানান, এপ্রিল
থেকেই ভারত মুক্তিবাহিনীকে ট্রেনিং দিতে শুরু করে।
জেনারেল জ্যাকব আরো বলেন, এটা ছিল বাংলাদেশের ফাইট, ইস্টবেঙ্গল
রেজিমেন্ট ও মুক্তিযোদ্ধারা দেশকে ভালোবেসে সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে, আমরা পাশে ছিলাম। ইন্দিরা গান্ধী ও জেনারেল জ্যাকবের মন্তব্য
থেকে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামে ভারত কীভাবে জড়িয়ে পড়ে এর আঁচ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের নির্বাসিত সরকার এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ
প্রতিষ্ঠান—যেমন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, মুক্তিবাহিনী ইত্যাদি গড়ে তুলতে ভারত ব্যাপকভাবে সহায়তা
করেছিল। আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে বাংলাদেশের অস্থায়ী প্রবাসী সরকার গঠন করা
হয়। এই
সরকারের কার্যক্রম শুরু হয় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের কাছে বৈদ্যনাথতলায়।
পাকিস্তানি বাহিনীর চাপে শিগগির প্রবাসী সরকার
ভারতে সরে যেতে বাধ্য হয়। তখন কলকাতায় স্থাপন করা হয় এর প্রধান কেন্দ্র।
অস্থায়ী সরকারের ব্যয়ের বড় অংশই বহন করে ভারত। এর
ফলে বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অনেক অবাধে ও ব্যাপক মাত্রায়
প্রচারণা চালানো সহজ হয়।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায়ও
ভারত সহায়তা করে। কলকাতা রেডিও স্টেশনের একটি তলায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের জায়গা
করে দেওয়া হয়। এর কার্যক্রম শুরু হয় জুন মাসে,
বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়। ভারতের ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক কাজে লাগিয়ে এ
কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা সম্ভব হয়।
মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতার সংগ্রাম বিফলে পর্যবসিত
হয় যদি আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় না করা যায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় টার্নিং
পয়েন্ট ছিল ভারতের পক্ষে সোভিয়েত রাশিয়ার সরাসরি সমর্থন প্রদান। ভারত
সরকার সোভিয়েত রাশিয়া সফর করে তাদের সাথে ২২ বছরের শান্তি চুক্তি করেন, সেই চুক্তির জের টেনে চমৎকার কূটনৈতিক দক্ষতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। ভারত
সোভিয়েত সরকারকে বোঝাতে সমর্থ হয় যে,
ভারতের মতই বাংলাদেশ রাষ্ট্র হবে একটি সমাজতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ
রাষ্ট্র। পৃথিবীর সেসময়ের শীর্ষশক্তি সোভিয়েত সরকার ভারত সরকারের বুদ্ধিদীপ্ত
কূটনৈতিক দাবিকে অগ্রাহ্য করতে পারেননি,
এখানেই ভারত পুরো যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেয় । রুশ
ছত্রছায়ার ফলেই ভারত চীনের হুমকি থেকে মুক্ত হয়ে আমাদেরকে সক্রিয়ভাবে সামরিক সাহায্য
দেওয়া শুরু করেন। রাশিয়ার এই সমর্থন আমাদের মুক্তি সংগ্রামকে বিশ্ব পরিমন্ডলে এক অনন্য
উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলো, আর
তা সম্ভব হয়েছিলো ভারতের বিচক্ষণতার মাধ্যমেই।
ইন্ডিয়া গেট আপনাকে নিয়ে যাবে সেই ইতিহাসে, চোখের সামনে ভেসে উঠবে ভারত-বাংলাদেশ
সম্পর্কের আদি যাত্রা।
তাজমহল,
আগ্রা ফোর্ট, অক্ষরধাম মন্দির, গোলকুন্ডা ফোর্ট এক অপরুপ স্থাপত্যকর্মের শিক্ষণীয় নিদর্শন। কিভাবে
নিজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে যুগের পর যুগ ধরে রাখা যায়, কিভাবে স্থাপত্যকর্মকে বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য ও
আকর্ষণীয় করে তোলা যায় তার অন্যতম উদাহরণ হচ্ছে এই জায়গাগুলো। ট্যুরিস্ট
প্লেস হিসেবে এই জায়গাতে যেসব উপাদেয় থাকার দরকার তা সব সেখানে সন্নিবেশিত আছে। গুলকোন্ডা
ফোর্টে যে লাইট মিউজিক্যাল শো হয় তা শুধুমাত্র সিনেমেটিক কিছু ভাবলে ভুল হবে। বরং
ইতিহাসকে জীবন্ত করে মানুষের কাছে সেখানে তুলে ধরা হয়, ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহ আনন্দের সাথে জানার এক দারুণ মাধ্যম
হিসেবে আমরা গোলকুন্ডা ফোর্টের সৌন্দর্য উপভোগ করেছি।
আমার ব্যক্তিগত উপলব্ধি হচ্ছে, বাংলাদেশের
ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোকে চমকপ্রদ ও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারলে ট্যুরিস্টদের জন্য দারুণ
এক জায়গা হতে পারে বাংলাদেশ।
২০১৯ সালের পহেলা এপ্রিল হায়েদ্রাবাদের জওহরলাল নেহরু টেকনোলোজিকাল বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনটিইউ) যেনো ছিলো ভারত-বাংলাদেশ এর মিলনমেলা, তারুণ্যের মিলনমেলা বললেও খুব একটা বাড়াবাড়ি হবেনা। তেলেঙ্গানা রাজ্যের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের তরুণ ডেলিগেটদের বরণ করে নেয় বাঙালি সংস্কৃতিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলরুমে যে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে তার সুখস্মৃতি আমরা এখনো ভুলতে পারিনা। আমরা জেনেছি তাদের সংস্কৃতি আবার তারা জেনেছে আমাদেরটা। গানের সাথে একতালে যখন সব তরুণরা নেচে উঠেছিলো তখন সেখানে কে বাংলাদেশী আর কে ভারতীয় তা কেউ আলাদা করতে পারেনি। ঐ সময়টুকু ছিলো তারুণ্যের, ছিলো আমাদের। সংস্কৃতি আমাদের ভুলিয়ে দিয়েছিলো কাঁটাতার বলতে আমাদের মাঝে কিছু আছে। আমরা সবাই একসাথে গেয়েছি, একসাথে নেচেছি। মনে হচ্ছিলো পৃথিবীর সকল সমস্যার সমাধান বুঝি এখানেই নিহিত, এখানেই মিটবে দ্বিপক্ষীয় সমস্যা, এখানেই ঘুচবে আমাদের বন্ধুত্বের দূরত্বগুলো। তরুণদের এই পারস্পরিক যাত্রা অব্যাহত থাকুক, প্রতিবছর ইয়ুথ ডেলিগেশন টিম ভারতে যাওয়ার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তা চলুক যুগের পর যুগ, গণভবন থেকে জনপথ রোডের দূরত্ব আসুক কমে, এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।
-- এ বি এম মাহমুদুল হাসান, প্রতিষ্ঠাতা, ইয়ুথ প্ল্যানেট