×
  • প্রকাশিত : ২০২০-১১-২৭
  • ৯৬৬ বার পঠিত
  • নিজস্ব প্রতিবেদক

খবরটা শোনার পর থেকে স্তব্ধ হয়ে আছি! জানি যাকের ভাইয়ের শরীরটা অনেকদিন ধরেই খারাপ! কিন্তু কিংবদন্তীদের বিদায়ের জন্য আমরা কখনোই প্রস্তুত থাকি না! 
তিনি যাপন করে গেছেন অর্থবহ একটা জীবন! বহু মানুষের জীবনকেও করে তুলেছেন অর্থবহ! তাঁর অভিনয়, লেখালেখি, ছবি তোলা- সব কিছু নিয়েই তিনি আমাদের সংস্কৃতি জগতের মহীরুহ! 
আমার এই নাতিদীর্ঘ জীবনেও তাঁর কাছে আছে এক বড় ঋণ। কখনো এটা বলার সুযোগ হয় নাই! আজকে লিপিবদ্ধ করে রাখতে চাই! নাখালপাড়া থেকে উঠে আসা বাইশ তেইশ বছরের এক যুবক আমি একদিন তাকে ফোন করে বসলাম! একটা ডকুমেন্টারি বানাচ্ছি দুবলার চরের উপর! তাঁর সাথে দেখা করতে চাই! তখনো আমি কোথাও কিছু নির্মাণ করি নাই! 
নওরতন কলোনীর তার রুমটায় দুপুরে আমি যখন ঢুকলাম তখন জানালা দিয়ে উনি বাইরের গাছ দেখছিলেন! এমন আগ্রহ ভরে দেখছিলেন যেনো খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু! তারপর আমাকে দেখে তার চেয়েও গুরুত্ব নিয়ে তাকালেন, মনোযোগ দিয়ে শুনলেন আমি কি চাই! তিনি তখন বিশাল তারকা! আমার ডকুমেন্টারিতে, আমি চাইলাম, উনি যেনো ভয়েস ওভার পাঠ করেন! ছোটলু ভাই সেই অখ্যাত আমার কথায় রাজী হলেন! রাজী হলেন কি, উনি এমন করতে লাগলেন মনে হলো আমি উনাকে নির্বাচন করার মাধ্যমে যেনো একটা ফেভার করেছি! তারপর রেকর্ডিংয়ের দিন আধা ঘণ্টা আগে চলে গিয়ে আমার সাথে বসলেন রিহার্সেল করতে! আমি যেভাবে চাই সেটা কীভাবে উনি ডেলিভার করবেন সেটা নিয়ে তার যে প্রাণপণ চেষ্টা! কিছুক্ষণ পর পর জানতে চান পরিচালকের মনমতো হচ্ছে কিনা! এই যে বিনয়, এই যে আমার মতো অখ্যাত লোককে পরিচালকের সম্মান দেয়া, এটা আমার আত্মবিশ্বাস তৈরিতে কত বিশাল কাজ করেছে এটা বোঝাতে পারবো না! আত্মবিশ্বাসের চাকা পাংকচার করে দেয়ার কালচার যে দেশে চলে, সেখানে এই কাজটা যে একটা তরুণকে কতটা শক্তিশালী করে তুলতে পারে, সেটা নিশ্চয়ই বোঝা যায়! 
যাকের ভাই, আমি জানি আপনি এরকম আরো বহু মানুষের জীবন অর্থবহ করে তুলেছিলেন! 
আপনার চিরশান্তির জন্য দোয়া করি!

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)


নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat